গুলশানের হলি আর্টিসান মামলার পেপারবুক প্রস্তুত হলেও ডেথ রেফারেন্স শুনানি শুরু হয়নি হাইকোর্টে

রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিসান রেস্তোরাঁয় ভয়াবহ হামলার ঘটনায় বিচারিক আদালতের রায়ের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) শুনানির জন্য পেপারবুক এক বছর আগে প্রস্তুত করা হলেও তা পড়ে আছে হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখায়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পেপারবুক প্রস্তুত হলেও করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারির কারণে শুনানির উদ্যোগ নেয়া সম্ভব হচ্ছে না।তবে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন আশা প্রকাশ করছেন, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এই চাঞ্চল্যকর মামলার ডেথ রেফারেন্সের শুনানি চলতি বছরই হাইকোর্টে শুরু করা সম্ভব।২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে হলি আর্টিসান রেস্তোরাঁয় ঘটেছিল নারকীয় জঙ্গি হামলা। জঙ্গিরা দেশি-বিদেশি নাগরিকসহ ২৩ জনকে হত্যা করে। পরে সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযানে নিহত হয় জঙ্গিদের ছয়জন। একজন ধরা পড়ে।

ওই ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গুলশান থানায় একটি মামলা করেন ওই থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রিপন কুমার দাস। এই মামলার তদন্ত চলাকালে একের পর এক অভিযানে ধরা পড়তে থাকে অনেক জঙ্গি। পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের পরিদর্শক হুমায়ুন কবির মামলাটি তদন্ত করে ২০১৮ সালের ১ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন। একই বছরের ২৬ নভেম্বর অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান।

এ মামলার বিচার শুরুর সময় আট আসামির ছয়জন কারাগারে ছিলেন। বিচার চলাকালে বাকি দু’জন গ্রেফতার হন। আসামিদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ৬(২)(অ), ৭,৮,৯,১১,১২ ও ১৩ ধারায় চার্জ গঠন করা হয়। মোট ২১১ জন সাক্ষীর ১১৩ জন অত্র আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেন।এরপর আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থন এবং রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের মাধ্যমে ২০১৯ সালের ১৭ নভেম্বর এ মামলার বিচারকাজ শেষ হয়। ওইদিনই আদালত রায় ঘোষণার জন্য ২৭ নভেম্বর দিন ধার্য করেন।

রায়ে মামলার আট আসামির সাতজনকে মৃত্যুদণ্ড ও একজনকে বেকসুর খালাস দেন আদালত। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেক আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজীব গান্ধী, আসলাম হোসেন ওরফে র্যাশ, আব্দুস সবুর খান, রাকিবুল হাসান রিগ্যান, হাদিসুর রহমান, শরিফুল ইসলাম ওরফে খালেদ এবং মামুনুর রশিদ রিপন। এছাড়া ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজানকে বেকসুর খালাস দেন আদালত।

scroll to top